নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশের বেশি হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
বৃহস্পতিবার সকালে এনসিসি ব্যাংক মেধাবৃত্তি প্রকল্পের আওতায় বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
গভর্নর বলেন, ‘আর্থিক অন্তর্ভূক্তি, কৃষি, এসএমই ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদনশীল খাতে বেশি করে অর্থায়ন করা হয়েছে। যার সুফল হিসেবে ধারাবহিকভাবে কমছে মূল্যস্ফীতি। বেড়েছে খাদ্য উৎপাদন। নিয়ন্ত্রণে রেখেছি খাদ্য মূল্যস্ফিতিকেও। একটু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে প্রবৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশের বেশি হবে।’
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মানুষ এখন অনেক বেশি অন্তর্ভূক্ত। গরিবের সবচেয়ে বড় শত্রু খাদ্যমূল্য। এ খাদ্যমূল্য এখন নিয়ন্ত্রণে। এক গবেষণায় দেখা গেছে গরিবদের প্রতিদিনের আয় ১১ কেজি চাল। এখান থেকে তিন কেজি তারা প্রতিদিন খায়। বাকিটুকুর সমপরিমাণ অর্থ তারা নিজেদের অন্যান্য কাজে ব্যয় করে থাকে। ঢাকায় আগে গ্রাম থেকে টাকা আসতো। মোবাইল ব্যাংকিং চালুর পর বর্তমানে প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩৫০ কোটি টাকা গ্রামে যায়। অর্থনীতির এই যে সার্বিক উন্নয়নমুখী কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে চলছে।
সামাজিক দায়বদ্ধ কার্যক্রমে (সিএসআর) ব্যাংকিং খাতের অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, প্রতিটি ব্যাংক যদি গরিব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয় তাহলে বছরে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষাজীবন নিশ্চিত হয়। গত পাঁচ-ছয় বছরে ব্যাংকগুলো এ রকম প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তির আওতায় নিয়ে এসেছে। এনসিসি ব্যাংকের মত আরও কয়েকটি ব্যাংক শিক্ষা খাতে বড় সিএসআর প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ ধরনের কাজই সত্যিকারের সিএসআর। যাকে-তাকে আর্থিক অনুদান বা কিছু একটা কিনে দেয়ার নাম সিএসআর নয়। সমাজের পিছিয়ে পড়া, অবহেলিত মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করা ও তাদের উন্নয়নে সহায়তা করাই সিএসআর।
তিনি বলেন, আমরা নির্দেশনা দিয়েছি মোট সিএসআর ব্যয়ের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ যেন শিক্ষা খাতে ব্যয় হয়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিএসআর কার্যক্রমের নীতিমালা মেনে কাজ করতে হবে। আমরা বিদ্যমান সিএসআর নীতিমালাকে আরও সুষ্ঠু, যুগোপযোগী এবং গতিশীল করার উদ্যোগ নিয়েছি। যা খুব শিগগিরই জারি করা হবে। ব্যাংকগুলো যাদের অর্থায়ন করছে তাদেরও সিএসআর কার্যক্রমে উৎসাহিত করতে হবে। ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলো সার্বিকভাবে তাদের সিএসআর কার্যক্রমের গভীরতা অনেক বাড়িয়েছে। গত পাঁচ-ছয় বছরে ব্যাংকিং খাতে সিএসআর কার্যক্রম প্রায় দশ গুণ বেড়েছে।
এনসিসি ব্যাংকের এ অনুষ্ঠানে ২০১৪ সালের এসএসসি ও এইচএসসি জিপিএ ৫ পাওয়া ২৭৫ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ১৫০ জন এসএসসি শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য ১ হাজার এবং এইচএসসির ১২৫ জন শিক্ষার্থীকে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম, ভাইস চেয়ারম্যান এ এস এম মঈনউদ্দিন মোনেম। উপস্থিত ছিলেন পরিচালক এম এ আউয়াল, খায়রুল আলম চাকলাদার, মো. আমিরুল ইসলাম, সোহেলা হোসেন, মো, আবুল বাশারসহ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা।