ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চরফ্যাশনে মানব সৃষ্ট সুন্দরবন

দৈনিক পাঞ্জেরী
ডিসেম্বর ১৮, ২০১৪ ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

vola01ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার দক্ষিণ উপকূলের চরফ্যাসনের কুকরী মুকরী ম্যানগ্রোভ বাগানের কয়েক হাজার হেক্টর এলাকা নিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে মানব সৃষ্ট (ম্যান মেইড) সুন্দরবন।
কেবল প্রাকৃতিকভাবে নয় বরং প্রকৃতি এবং মানুষের যৌথ অবদানে বিকশিত হচ্ছে এ সুন্দরবন। আগামী ১৫ বছর পর দেশের দ্বিতীয় সুন্দরবন হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে কুকরী বন বিভাগ। সরকারি অর্থায়নে কুকরী বন গবেষণা বিভাগ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
১৯৭২ সনে ভোলার দক্ষিণ উপকুলের কুকরী-মুকরীতে ম্যানগ্রোভ বাগান তৈরি করে বন বিভাগ। বর্তমানে কুকরীতে ৩ হাজার হেক্টর সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বাগান রয়েছে এবং আরো প্রায় ৪ হাজার ৬শ হেক্টর বাগান সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঢালচরেও ৭ হাজার হেক্টর বনায়ন করা হয়েছে। এসব বাগানের বেশিরভাগই কেওড়া প্রজাতির গাছ রয়েছে। যা ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়স প্রাপ্তির পর পর্যায়ক্রমে মরতে শুরু করবে। ফলে সময়ের সঙ্গে নিকট অতীতে বিশাল বিস্তৃত এই ম্যানগ্রোভ বাগান বিলুপ্তির আশঙ্কা আছে।
কুকুরীর বন গবেষণা কেন্দ্রের কর্মী বিধান যোশেব গোমেজ জানান, কুকরী এবং ঢালচর রেঞ্জের আওতায় ১৫টি বাগান রয়েছে। যেগুলো অপেক্ষাকৃত পুরাতন এবং টেকসই হয়েছে। এসব বাগানের উচ্চতা বেড়েছে। ফলে এখানে কেওড়া প্রজাতির ম্যানগ্রোভ বাগানের নিচে সুন্দরবনের বৃক্ষপ্রজাতিগুলোতে সৃষ্টি শুরু করা হয়েছে।
কুকরীর বন গবেষণা কেন্দ্রের স্টেশন কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানান, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপকূলের ম্যানগ্রোভ বাগানের কেওড়া প্রজাতির বৃক্ষ মরে যাবে। যার শূণ্যস্থান দখল করবে সুন্দরবন প্রজাতির গাছ-সুন্দরী, পশুর, গেওয়া, খলসী, ধুন্দল, বাইন, কেরপা, হেন্তাল, গড়ান, গোলপাতা,কাঁকড়া  এবং বাইন। কুকরীর চর দিগল, নার্সাসির খাল, চর শফি, চর জমির, চর ইসলাম এবং জাইল্যার খালের ১৬ একর বাগানে সুন্দর প্রজাতির বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে এবং যাদের শতকরা ৮০ ভাগ বৃক্ষই টিকে গেছে, যা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি।
বন গবেষণা কর্মকর্তা জানান, ১৯৯০ সনে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এখানে সুন্দরবন প্রজাতির বৃক্ষের চারা উৎপাদন এবং বনায়ন শুরু করা হয়। প্রথম প্রথম সুন্দরবন থেকে বীজ সংগ্রহ করে কুকরীতে সিডবেডে চারা উৎপাদন এবং বনায়ন করা হয়েছে। এখন কুকরীর বাগানের গাছ থেকেই বীজ সংগ্রহ করে চারা উৎপাদান এবং বনায়ন করা হয়। আন্ডার প্লান্টিং ট্রায়েল উইথ ম্যানগ্রোভ স্পেসিস ইন দ্য কোস্টাল বেল্ট অব বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে বন গবেষণা ইউনিট মানব সৃষ্ট সুন্দরবন গড়ার কার্যক্রম এগুচ্ছে।  স্থানীয় একদল নারী শ্রমিক বীজ থেকে চারা উৎপাদন এবং বাগানে চারা রোপন এবং পরিচর্যার কাজ করছে।
স্থানীয় নারী শ্রমিক রাজিয়া সুলতানা জানান, মে থেকে আগস্ট মাসে বাগানের সুন্দরবন প্রজাতির বৃক্ষের বীজ আসে। ৫০/৬০ জনের নারী শ্রমিক বাগান থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। বীজগুলো অংকুরোদগমের জন্য সিডবেডে রাখা হয়। অঙ্কোরোগম হলে প্রত্যেকটা সফল বীজ জোয়ার ভাটায় প্লাবিত স্থানে তৈরি নার্সারিতে পলিব্যাগে বসানো হয়। ছয় মাস বয়সে চারাগুলো বাগানে রোপন করা হয়।
কুকরীর বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা গেছে,  ১৯৯০ সাল থেকে বিভিন্ন সময় রোপিত সুন্দরী গরান গেওয়াসহ সুন্দরবন প্রজাতির গাছগুলো ৩০/৪০ ফিট পর্যন্ত  উঁচু হয়েছে। এসব গাছ থেকে বীজ ঝড়ে প্রাকৃতিকভাবেই বাগানগুলোতে নানান আকৃতির সুন্দর বন প্রজাতির গাছে ছেয়ে গেছে।
কুকরীর রেঞ্জ কর্মকর্তা সাজেদুল আলম বলেন, সুন্দরবন প্রজাতির বৃক্ষের বিকাশের চলমান ধারা অব্যহত রাখতে পারলে আগামী ১৫ বছর পর কুকরী হবে মানব সৃষ্ট প্রথম সুন্দরবন আর দেশের দ্বিতীয় সুন্দরবন।