ঢাকাশুক্রবার , ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ড্রোন হামলার পরিকল্পনাকারীও সেই রেজাউল

দৈনিক পাঞ্জেরী
ডিসেম্বর ১৯, ২০১৪ ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

drone01নিজস্ব প্রতিবেদক : আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত রেজাউল কবিরই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর ড্রোন হামলার মূল পরিকল্পনাকারী।
তার পরামর্শেই আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের তাত্ত্বিক নেতা জসিম উদ্দিন রাহমানি (বর্তমানে জেলে) সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কথিত জিহাদে বাধাদানকারীদের শনাক্ত করে হামলার পরিকল্পনা করেন।
রেজাউল কবির বর্তমানে জামিনে আছেন। তাকে ফের গ্রেপ্তার করার জন্য ঢাকার একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর রয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর দলও রেজাউল কবিরকে খুঁজছে।
২০১০ সালে একবার গ্রেপ্তারের পর এফবিআই ঢাকায় এসে রেজাউল কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্র এ তথ্য জানায়।
গত মঙ্গলবার আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগরর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে ড্রোন বা কোয়াড হেলিকপ্টারের মতো রিমোর্ট কন্ট্রোল চালিত ‘ফ্লাইং মেশিন’ সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, ড্রোন বা কোয়াডকপ্টার তৈরি করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ছবি তুলে সেসব স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা। দুই জঙ্গিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে ডিবি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ দুজনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তানজিল হোসেন বাবু ও তার সহযোগী গোলাম মওলা মোহন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তাদের বর্ননায় রেজাউল কবির সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে দাবি করেছে গোয়েন্দারা।
গ্রেপ্তারকৃতরা ডিবিকে জানান, যাত্রাবাড়ীর একটি বাসায় তারা ছয়জন মিলে ড্রোন তৈরির কাজ করতেন। ডিবির অভিযানের আগে আরো চারজন পালিয়ে যায়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (জেসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘২০১০ সালে রেজাউল কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলেন। এরপর বেশি কিছুদিন কারাগারে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি তিনি জামিনে থেকে আগের মতই জঙ্গিদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বাড়ছে। তাকে ফের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।’
সম্প্রতি ভারতের বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশি জেএমবি জঙ্গিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবি করছে দেশটির গোয়েন্দারা। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএর একটি বিশেষ টিম ঢাকা সফর করে গেছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের পেশোয়ারের একটি স্কুলে ভয়াবহ হামলার বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীব্যাপী তোলপাড় চলছে। বাংলাদেশেও এ ধরনের হামলা যাতে না হতে পারে তা নিয়ে সর্বত্র সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে আনসারুল্লাহ জঙ্গিদের ড্রোন বা কোয়াডকপ্টারের মতো ‘ফ্লাইং মেশিন’ সরঞ্জামসহ দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করার পর নতুন করে চিন্তাভাবনা চলছে জঙ্গিদের নিয়ে।
বিস্ফোরক বহনে সক্ষম ড্রোন বা কোয়াডকপ্টারের মতো রিমোর্ট কন্ট্রোল চালিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহযোগিতায় জঙ্গিরা নাশকতার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে বলেও তথ্য রয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, জামিনে বের হওয়া রেজাউলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে তার বর্তমান অবস্থান এখনো অজানা। বিষয়টি জানার পর এফবিআই খোঁজ নিচ্ছে। প্রয়োজনে তারা বাংলাদেশে আসারও চিন্তাভাবনা করছে।
সূত্রমতে, ড্রোন নিয়ে কাজ কাজ করার আগে ২০১০ সালে রেজাউল কবির বিষয়টি নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন। সে সময় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি গোয়েন্দাদের জানান, ড্রোন নিয়ে কাজ করার আগে তিনি তৎকালীন জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় কিছুদিন অবস্থান করেন। এরপর মালেয়েশিয়ার একটি বিমানবন্দরের সন্নিকটে বাসাভাড়া নিয়ে সস্ত্রীক বসবাস করেন। মূলত বিমান উড্ডয়ন ও নামার বিষয়টি তিনি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্যই বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান নেন। কিছুদিন সেখানে থাকার পর তিনি অন্য আরো কয়েকটি দেশের বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান করেন। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান তিনি।
মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃতরা ডিবিকে জানায়, তারা দু’জনই আনসারুল্লাহ জঙ্গি দলের অন্যতম নেতা মাওলানা জসীম উদ্দিন রাহমনীর অনুসারী হিসেবে জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে তারা ভূমি থেকে ভূমিতে আক্রমণ কষ্টসাধ্য বলে আকাশ পথে আক্রমণের পরিকল্পনা করছিল। কমপক্ষে ৩০ কেজি ওজনের বিস্ফোরক বহনে সক্ষম একটি কোয়াডকপ্টার তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল তারা।
ডিবি সূত্র জানায়, কথিত জিহাদের মাধ্যমে সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে আনসারুল্লাহ বাংলাটিম থানা থেকে অস্ত্র লুট ও বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনার তথ্য এর আগে মাওলানা জসীমসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করার পর পাওয়া যায়। ১০ সদস্যের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্রও দিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দলের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।