স্পোর্টস ডেস্ক : হঠাৎ অশান্ত হয়ে উঠেছে ভারতের ড্রেসিং রুম। কী হলো তাহলে! কুল ক্যাপ্টেন নামে পরিচিত মহেন্দ্র সিং ধোনির আগমনের পরও সেই অশান্ত পরিস্থিতি ঠিক হলো না! যার ফলশ্রুতিতে একদিন হাতে রেখেই ব্রিসবেন টেস্টে পরাজয় বরণ করতে হলো ভারতকে।
অ্যাডিলেডের পর ব্রিসবেনেও হার। যথেষ্ট লড়াই করেও ম্যাচের ফলাফলে কোনও পরিবর্তন আনা যাচ্ছে না। ঠিক কী সমস্যা হচ্ছে ভারতের? দু’দুটো টেস্ট ভালো খেলেও হারার পর স্বভাবতই মুষড়ে পড়েছে টিম ইন্ডিয়ার সদস্যরা।
মূলতঃ ছোট্ট একটি ঘটনার কারণে নাকি ভারতের ড্রেসিং রূম হঠাৎ অশান্ত হয়ে ওঠে। যার প্রভাব পড়েছে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের ব্যাটিংয়ের ওপর এবং এ কারণেই এমন বিপর্যয়। তবে দীর্ঘদিন বিরাট কোহলি নেতৃত্বে থাকা এবং ধোনির অনুপস্থিতির পর হঠাৎ দলে ফেরার পর এমনিতেই পরিবেশ কিছুটা ওলট-পালট হয়ে যাবে, এটা যেন স্বাভাবিকই ছিল। মূল কথা হলো, ভারতীয় দলে অশান্তির বীজ বপন হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। যার কারণেই ব্রিসবেন টেস্টে হঠাৎ করে হেরে বসল ভারত।
ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিই জানিয়েছেন, ম্যাচ হারার পিছনে ড্রেসিংরুমের পরিবেশকেই দায়ী। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে ধোনি বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব-ই হারের প্রধান কারণ।’
মাত্র ১২৮ রান তাড়া করতে নেমে শনিবার টেস্টের চতুর্থ দিনে চার উইকেটে অনায়াসে ম্যাচ জিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টেস্টের পরেই ‘বিরাট আনো’ নীতিতে সোচ্চার হয়েছিলেন দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রাক্তনরা। এদিনের ধোনির কথাতেই পরিষ্কার, যে ভারতীয় দলের ভিতরকার পরিস্থিতিও এখন খুব একটা ভালো নয়।
অধিনায়কের সঙ্গে যে ক্রিকেটারদের সম্পর্কে কিছুটা চিঁড় ধরেছে, সেটাও ধোনির এদিনের ইঙ্গিতেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ভারত অধিনায়ক এদিন আরও বলেন, ‘আজকের প্রথম সেশনটা একেবারেই ভালো যায় নি আমাদের। ড্রেসিংরুমে নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়েছে। যেমন শিখর ব্যাট করতে নামবে না বিরাট। আমরা গোটা পরিস্থিতিকে ঠিকঠাক সামাল দিতে পারিনি।’
মূলত ঘটনা ঘটেছিল চতুর্থ দিন সকালে ব্যাট করতে নামার আগে। আগেরদিনই ক্রিজে গিয়ে ভালো ব্যাটিং করছিলেন শিখর ধাওয়ান। কিন্তু শনিবার সকালে নেটে ব্যাটিং করতে গিয়ে কনুইতে আঘাত পান শিখর। প্রথমে মনে করা হয়েছিল আঘাত গুরুতর নয়। পরে ড্রেসিং রূমে উঠে আসার পর দেখা গেল ব্যাথা ভালোই এবং শিখর জানিয়ে দেন, যে তিনি এখন ব্যাট করতে নামতে পারবেন না।
এরপরই বিরাট কোহলিকে জানানো হয় ব্যাট করতে নামার জন্য। কিন্তু বিরাট হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি। এমনকি মাত্র কয়েক মিনিট আগে সিদ্ধান্ত জানানোয় মানসিকভাবেও প্রস্তুত হতে পারেননি। উইকেটে যাওয়ার পরও এই সিদ্ধান্তহীনতার প্রভাব ছিল এবং পুরো দলকেই যে কারণে ভুগতে হয়েছিল।
ধোনি নিজেই জানিয়েছেন, ‘নেটে যখন প্র্যাকটিস চলছিল, তখন শিখর খুব ভালো খেলছিল। তাই আমরা ভেবেছিলাম ও ব্যাট করার মতো জায়গায় রয়েছে। কিন্তু যখন শিখর এল, তখন ওর খুব বেশি ব্যথা হচ্ছিল। বিরাটের কাছে তখন প্রস্তুতি নেওয়ার মতো একেবারেই সময় ছিল না। তাতেই ড্রেসিংরুমের পরিবেশ অশান্ত হয়ে ওঠে।’