বিনোদন ডেস্ক : সংগীতাঙ্গনে অন্যের লেখা কিংবা সুর করা গান নিজের নামে চালিযে দেয়ার প্রবণতা দীর্ঘদিনের। সেই ধারাবাহিকতায় এবার কবি ও নির্মাতা কামরুজ্জামান কামু তার লেখা গান অন্যের নামে প্রকাশের অভিযোগ আনলেন।
শুক্রবার রাতে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে কামরুজ্জামান কামু লিখেন, ‘শওকত আলী ইমন হইতে সাবধান! ইহা একটি নিম্নমানের চোর। অরূপ রাহী একদিন স্টেডিয়াম থেকে ছায়াছবির গানের একটা ডিভিডি কিনে আনলেন। শুনে আমি থ। অনেকদিন আগে আমি শওকতকে কয়েকটা গান দিছিলাম সালমার অ্যালবাম-এর জন্যে। একটা গান ছিল, ‘সুতা পরানে বান্ধিয়া…’। ডিভিডিতে দেখলাম, সেই গানের মুখ ঠিক রাইখা ভিতরে ফুংফাং কথা দিয়া একই সুরে একটা গান বানানো হইছে। গীতিকার কবির বকুল, সুরকার নাকি শওকত আলী ইমন! এরে এখন কী করা উচিৎ?
এ প্রসঙ্গে শওকত আলী ইমন বলেন, ‘প্রায় ৮ বছর আগে কামুর বাসায় বসে আমি গানটির সুর করেছিলাম। মূলত সালমার জন্যে গানটির সুর করা হয়েছিল। তখন প্রযোজকও কামুকে তার পাওনা বুঝিয়ে দিয়েছেন। তারপর সেই গানটি একটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়। চলচ্চিত্রে এভাবে গান ব্যবহারে রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। এ ক্ষেত্রে আমার দোষ কোথায়। আমি তো শুধু সুর করেছি। কেন গানটিতে গীতিকার হিসেবে কামুর নাম ব্যবহার করা হলো না, তা পরিচালক কিংবা প্রযোজক ভালো বলতে পারবেন।’
এদিকে শনিবার সকালে ফেসবুকে আরো একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন কামু। সেখানে তিনি লিখেন, গান চুরির ঘটনা নিয়ে ব্যারিস্টারের সাথে কথা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে!’
কামুর দ্বিতীয় স্ট্যাটাসের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইমনের বলেন, ‘তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাইলে, আগে জানতে হবে তার কাছে কি প্রমাণ আছে। কিন্তু আমি যতটুকু জানি, তাকে তার পাওনা তখনই বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই।’
গীতিকার কবির বকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রে আমি ফরমায়েশি গীতিকার হিসেবে কাজ করি। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় ছবির প্রযোজক বা পরিচালক একটি গান নিয়ে এসে বলেন, ভাই গানটা আমার ছবির সিক্যুয়েন্সের সঙ্গে মিলিয়ে করে দেন। আমিও সেই কাজটি করে দেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘চলচ্চিত্রে কারো গান ব্যবহার করলে অবশ্যই তার নামটি উল্লেখ করা উচিত। এ ক্ষেত্রে আমি কামুকে সমর্থন করি। তবে অডিও অ্যালবামে তার নাম না থাকার কারণ আমার জানা নেই। এটা অডিও প্রতিষ্ঠানটি ভালো বলতে পারবে।’
বলে রাখা ভালো, এর আগেও কবির বকুলের নামে এ ধরণের অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি অন্যের গান নিজের নাম করে চালিয়ে দেন। ১৯৯৭ সালে গীতিকার লতিফুল ইসলাম শিবলীর একটি গানে গীতিকার হিসেবে কবির বকুলের নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই না গীতিকার জাহিদ আহমেদও তার বিরুদ্ধে গান চুরির অভিযোগ এনেছিলেন এবং এর প্রতিবাদে শাহবাগের ছবির হাটে এক প্রতিবাদ সমাবেশেরও আয়োজন করেছিলেন জাহিদ আহমেদ। এ সময়কার তরুণ বেশ কয়েকজন গীতিকারও কবির বকুলের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনেছেন।