
ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে ক্যান্টনমেন্ট করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ সোমবার সচিবালয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক ও বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাট ও বরগুনা জেলা প্রশাসককে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মাঝে কম্বল বিতরণের নির্দেশ দেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী বরগুনার জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম এবং লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সূচনা বক্তব্যে বলেন, ‘বরগুনা জেলা বাংলাদেশের একেবারে দক্ষিণে, লালমনিরহাট উত্তরে। সুদূর এ দুই জেলার সঙ্গে আজকে যে কথা বলছি সেটাই ডিজিটাল বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ‘রংপুরে দুর্বৃত্তের প্রভাব ছিল এবং মঙ্গা নামে পরিচিত ছিল। আমরা এটা দূর করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘বরগুনা জেলার যোগাযোগ অত্যন্ত দুর্গম। এখানে আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল করেছি। আমরা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যন্ত কি কি সমস্যা আছে তা নির্ণয় করে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আপনারা এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে এগিয়ে নিয়ে যান।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে না। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কেউ গৃহহারা থাকলে তাদের আমরা ঘর নির্মাণ করে দেবো।’
প্রধানমন্ত্রী এই ভিডিও কনফারেন্স ভবিষ্যতে সারাদেশের লোক যাতে দেখতে পায় সে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
তিনি বরগুনা জেল প্রশাসসক, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, বরুগুনা সিভিল সার্জন জেলা শিক্ষা অফিসার, বরগুনা উপজেলা চেয়ারম্যান ও তালতলি উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের বক্তব্য শোনেন। এরপর তিনি সেখানকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন। বিশেষ করে তালতলির উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার তা-ই করার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘জলদস্যুরা যাতে জেলেদের কোনো ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য কোস্ট গার্ডকে আরো শক্তিশালী করা হবে।’
তিনি জাতির উদ্দেশে বলেন, ‘বরিশালে ক্যান্টনমেন্ট করা হবে, পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করা হবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য মাল্টিপারপাস সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হবে।’
বরগুনা তথা দক্ষিণাঞ্চলকে জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য সবুজ বেষ্টনি তৈরির নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে বর্মি গ্রামের দিকে নজর দিতে বলেন, যেখানে রাখাইন সম্প্রদায় বাস করে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, লালমনিরহাট জেলা পরিষদ প্রশাসক, সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি উত্তরাঞ্চলে শীত পড়েছে উল্লেখ করে সেখানে ষাটোর্ধ্ব বয়সের যারা আছেন তাদের এবং প্রতিবন্ধীদের কম্বল বিতরণের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘নেপাল ভুটান এবং ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট সুবিধার জন্য কাজ করা হচ্ছে। বুড়িমাড়ী স্থলবন্দরে উন্নয়নের জন্য রেলপথের ব্যবস্থা করা হবে।’
তিনি সেখানকার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সেখানকার সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে, কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান রংপুর বিভাগীয় কমিশনার। প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন, ‘ওই অঞ্চলে অনেক দরিদ্র লোক আছে। বিশেষ করে কঙ্কারসার যারা তাদের দিকেও নজর দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারে আসলে মঙ্গা থাকে না।’
প্রধানমনত্রী বলেন, ‘ওই অঞ্চলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দ্বন্দ্বে অনেকে প্রাণ হারায়।’
এদিকে দৃষ্টি রেখে কারো মুখ না চিনে নিরপেক্ষভাবে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
সবশেষে তিনি আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান।