বিনোদন ডেস্ক : জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এবার গীরব ও দেশ বাঁচানোর আহ্বান জানালেন। তিনি তার ফেসবুকে একটি লেখা প্রকাশ করে এই আহ্বান জানান। পাঠকের জন্য লেখাটি প্রকাশ করা হলো।
একটি বিষয় আসলেই সত্যি, আপনি যদি কোনো একটি সেবামূলক ভালো কাজ করেন তাহলে সেই কাজটি আপনাকে আরো একটি ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা জোগায়৷
কিছুদিন আগেই সীমার ব্যাপারে বলেছিলাম আপনাদের৷ অভাবের রোষানলে পড়ে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করে যে মেয়েটি ঘরের কোনে মুখ লুকিয়ে কাঁদতো৷ এখন আর সীমা কাঁদেনা, ভালো আছে সে৷
এইতো সেদিন বাসায় ফেরার পথে দেখলাম কিছু বয়স্ক মানুষ রাস্তার পাশে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে৷ সহজেই অনুধাবন করতে পারলাম প্রচন্ড শীতে ওদের যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছে৷ এদের মত সারা দেশেই হয়তো এমন ছন্নছাড়া মানুষের অভাব নেই৷ যারা এই শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে৷ ভাবতেই নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হলো৷ যদিও আমি অনেক আগে থেকেই প্রতিবছর শীতার্তদের সহযোগিতা করি৷ এই অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার মায়ের কাছ থেকেই৷
যাহোক, দৃশ্যটি দেখেই মনে পড়ে গেলো আমার নিজ গ্রাম আর গ্রামের আশেপাশের দরিদ্র মানুষগুলোর কথা৷ যারা কিনা আমাকে গ্রামে যেতে দেখলেই ‘আমাদের মেয়ে, আমাদের মেয়ে’ বলে মাথায় তোলে রাখে৷ অনুভব করলাম, এই শহরেই এত শীত তাহলে গ্রাম অঞ্চলের কি অবস্থা!
রাস্তায় থাকা অবস্থায়ই সিদ্ধান্ত নিলাম বরাবরের মত এবারও এই ছন্নছাড়া, খোলা আকাশের নিচে বসবাস করা, তীব্র শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষগুলোর জন্য নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু করবো৷ সাথে সাথেই কল দিলাম নিজের গ্রামের বাড়িতে৷ ৫০০ দরিদ্র ব্যক্তির লিস্ট তৈরী করতে বললাম৷ সিদ্ধান্ত নিলাম আমার নিজের এলাকার এই ৫০০ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করবো৷
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৮ ডিসেম্বর শীতবস্ত্র নিয়ে গেলাম নিজ এলাকা নেত্রকোনায়৷ সেখানে মহাদেবপুর, কুমড়ী, চল্লিশা, চল্লিশা মাদ্রাসা ও এতিমখানা, হিরনপুর জাউসী মাদ্রাসায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করলাম৷
আমরা সন্ধ্যার সাথে সাথেই নিজের গায়ে গরম কম্বল জড়িয়ে নেই৷ কিন্তু একবারও ভাবিনা, ওই রেল স্টেশনে, বাস টার্মিনালে, লঞ্চ টার্মিনালে কিংবা রাস্তার পাশে, খোলা আকাশের নিচে কেমন আছে ছন্নছাড়া মানুষ গুলো৷
সন্ধ্যার পর কখনো কি ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে দেখেছেন, কেমন থরথর করে শীতে কাতরাচ্ছে তারা?
অসহায় মুখগুলো কেমন অনুনেয় করে তাকিয়ে আছে আপনার দিকে, তা কি দেখেছেন?
কখনো কি উপলব্ধি করেছেন শীতের তীব্রতা?
ভেবেছেন কি? কিভাবে ওরা খোলা আকাশের নিচে শীতের মধ্যে রাত কাটায়?
প্লিজ…একটু ভাবুন…
নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাড়িয়ে দিন সহানুভূতির হাত৷ আপনার দ্বারা অন্তত একজন শীতার্ত যেন শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পায় সেই চেষ্টা করুন৷
সবার স্লোগান হোক- গরীব বাঁচান, দেশ বাঁচান